সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
ভুমি উন্নয়ন সেবা মানুষের দৌড় গোড়ায় পৌছে দিতে চাই – ইউএনও মোছাঃ রনি খাতুন শ্যামনগরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর উপর হামলার অভিযোগ অতি স্বচ্ছতার সাথে নতুনভাবে পূনঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের আবেদন  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি ভূয়া সাংবাদিক সহ আটক তিন শ্যামনগরের কলবাড়ি বাজারে বিএনপি নেতা বাপ্পির দখলবাজি, তিন দোকানে জোরপূর্বক তালা আমার ভীষণ মন খারাপ লাগছে — ইউএনও মোছাঃ রনি খাতুন বদলী হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে সেই  জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান সদর উপ‌জেলায় যোগদান শ্যামনগরে খ্যাগড়াদানা কিশোর সংঘের উদ্যোগে ৪ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত। দুর্নীতিতে সেরা  জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এখনও বহাল তবিয়্যাতে শ্যামনগরের ইউএনওর হস্তক্ষেপে অবশেষে জনসাধারণ ফিরে এলো ঝাপার খালটি
এইমাত্র পাওয়া:
চোখ রাখুন

বেলজিয়াম হাঁস পালনে সফল ইসলাম আলী

আব্দুর রহিম
Update Time : সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

 

ভয়েস অফ সুন্দরবন রিপোর্ট: আব্দুর রহিম

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাসেমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসলাম আলী। এলাকার সবাই তাকে ‘হাঁস ইসলাম’ বলে চেনেন। তিন লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ৩০০টি হাঁস পালন শুরু করেন। চার বছরের ব্যবধানে তার এখন মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। বাড়িয়েছেন খামারের পরিধিও। এখন দেড় হাজার বেলজিয়াম হাঁস রয়েছে তার খামারে।

ইসলাম আলী বলেন, ২০০০সালে কিশোরগঞ্জ থেকে ৩০০টি ‘ক্যাম্পবেল’ জাতের হাঁসের বাচ্চা এনে খামার শুরু করি। ২০১৯ সালে নতুন জাতের বেলজিয়াম হাঁস নিয়ে আসি। বর্তমানে ১২০০টি বাচ্চা হাঁস রয়েছে। ৩০০টি বড় হাঁস প্রতিদিন গড়ে ২৯৬টি করে ডিম দিচ্ছে। ডিমের দাম ২০টাকা পিস। প্রতিদিন ডিম বিক্রি করেই পাঁচ হাজার ৯২০টাকা আয় হয়। এর মধ্যে খরচ রয়েছে দুই হাজার টাকা। এটি ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। প্রতি চালানে ৮০ থেকে ৯০হাজার টাকা লাভ হয়। লাভের টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি প্রতি বছর হাঁসের সংখ্যা বাড়াতে থাকি। ‘বর্তমানে হাঁসগুলো ডিম দিচ্ছে। ডিম ফুটিয়ে বাচ্চাও বিক্রি করছি। পাশাপাশি হাঁসগুলোর মাংস বেশ সুস্বাদু। বছরে নয় থেকে ১০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। গত মে মাস থেকে মাংসের পাশাপাশি বাচ্চাও উৎপাদন হচ্ছে। প্রায় ৪০লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। প্রতি সপ্তাহে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে।’বাচ্চা উৎপাদনে বছরে ৪০লাখ টাকা খরচ হলেও বিক্রি হবে কমপক্ষে ৮০ থেকে ৮৫লাখ টাকা। খামারে তেমন কোনো বিপর্যয় দেখা না দিলে বছরে ৪০ থেকে ৪৫লাখ টাকা লাভ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ২৪বছর ধরে শ্রম আর ধৈর্যের সঙ্গে হাঁসের খামার করছি। ব্যয় বাদ দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চলছে। হাঁস পালন করে এখন আমি সফল ও স্বাবলম্বী।

খামারে হাঁসগুলোর পরিচর্যা করছিলেন রহিমা খাতুন। তিনি বলেন, হাঁসগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। খাওয়াতে হয় ফিড ও পানি। সকাল ৭টার দিকে হাঁসগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশে পুকুর রয়েছে। সেখানেই সারাদিন কাটায় তারা।

কাসেমপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, হাঁসগুলো খুব সুন্দর দেখতে। আমাদের বাড়ির পাশেই খামারটি। অনেকে এখান থেকে হাঁস কিনে নিয়ে যান। অনেকে আসেন দেখার জন্য। বেশ ভালো ব্যবসা করছেন ইসলাম আলী।

তালতলা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, হাঁসগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। চার মাসের মধ্যে বাচ্চা দেয়। অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে এখানে হাঁস কিনতে আসেন।

সাতক্ষীরা জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, বেলজিয়াম হাঁস মাংস উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এখানকার খামারিরা মাংস ও ডিম উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের হাঁস দ্রুত বর্ধনশীল। একেকটির ওজন হয় চার থেকে পাঁচ কেজি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ হাঁসের চাহিদাও রয়েছে বেশ।

‘এ অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক হাঁসের খামার রয়েছে। এর মধ্যে বেলজিয়াম হাঁসের খামার রয়েছে ৩০-৩৫টি। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে যে কেউ এ ধরনের খামার গড়ে তুলে সচ্ছল হতে পারেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খামারিদের ডাক প্লেগ ভ্যাকসিনসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’