শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট: স ম জিয়াউর রহমান
কয়েকমাস আগে ভাই মারা যাওয়ার পরে কফিনের পাশে নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন শহীদ তোফাজ্জল। কদিন আগেও এলাকার এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পর নিজে কাঁধে করে অন্যের সহযোগিতায় বাঁশ এনে দিয়েছিলেন দাফনের জন্য।
আজ তিনি নিজেই কবরের বাসিন্দা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত শহীদ মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল নামে।
জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাকে। মা, বাবা আর ভাইয়ের কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন শহীদ তোফাজ্জল।
আজ ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টায় স্থানীয় একটি মাদরাসার মাঠে শহীদ তোফাজ্জলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শোকে কাতর এলাকাবাসী এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
জানাজায় কয়েক লাখো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা বলেন, শহীদ তোফাজ্জল খুবই হাস্যরসিক লোক ছিলেন। তাকে আমরা কখনই কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখিনি। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলতেন তিনি। আমরা এই মৃত্যুকে কোনোভাবেই মানতে পারছি না। আমাদের দেশের সর্বোচ্চ একটা বিদ্যাপীঠে এমন নৃশংস একটা ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনি। ও চুরি করে না, তবুও যদি করেও থাকতো এজন্য আইন রয়েছে। সামান্য কয়েক টাকার মোবাইলের জন্য একটা জীবনকে এভাবে চলে যেতে হবে তা মানা যায় না।
জানাজায় অংশ নেওয়া মাওলানা নুরুজ্জামান আলমাস বলেন, রাতে ঘুমাতে পারিনি, শুধু চোখের সামনে ভাত খাবার দৃশ্য ভেসে উঠে। শহীদ তোফাজ্জল আমার কোনো নিকট আত্মীয় না, তবুও ওর জন্য মায়া লাগে। এরকম একটা কাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে তা ভাবা যায় না।
শহীদনতোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক মিলন মিয়া জানান, স্কুল জীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী এবং শান্ত স্বভাবের লোক ছিল। ও সবসময় শিক্ষক এবং বড়দের সম্মান করতো। আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই এবং তাকে যারা মানসিক ভারসাম্যহীন করেছেন তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে শহীদ তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া বলেন, আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।