রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
সাতক্ষীরা- ৪ প্রার্থী মনিরুজ্জামানে পৃষ্ঠপোষকতায় দুই বিএনপি নেতার কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ।  শ্যামনগর উপজেলা জিয়া সাইবার ফোর্স-এর আয়োজনে দোয়া মাহফিল ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ শ্যামনগরে পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্পের উপকরণ বিতরণ   ৬ নম্বর রমজান নগর ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি অফিস উদ্বোধন ও খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রিতীর অভিযোগ উঠেছে  শ্যামনগরে স্টোকহোল্ডারস প্লাটফর্ম গঠন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরের ইট ভাটা শ্রমিক সুজন গাজীর এক সপ্তাহ থেকে কোন খোজ পাচ্ছে না পরিবার শ্যামনগরে ভুমিহীন পরিবারের জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, এঘটনায় আহত -২ শ্যামনগরে সিপিপি কর্মকর্তার অনিয়ম–দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় 
এইমাত্র পাওয়া:
চোখ রাখুন

নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে আতংকে এলাকাবাসী

উজ্জ্বল রায়
Update Time : রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

 

 

 

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:

 

 

নড়াইলের ভাঙ্গতে শুরু করেছে নবগঙ্গা নদী । ভাঙনের ঝুকিতে সড়ক, বাজার শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি মসজিদ কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নবগঙ্গা নদীর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে গেছে বসতভিটা, ফসলী জমি, কাঁচাপাকা ঘর, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আর ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে কালিয়া উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া মাহাজন সড়ক,বসত বাড়ি, বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত পদক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়।

 

কালিয়া উপজেলার নদীপাড়ের বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজারো বাসিন্দাদের কাছে নদী ভাঙ্গন একটি চিরচেনা বিষয়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বসতীরা তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কয়েক সপ্তাহের তীব্র ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থাপনা।

 

সরজমিনে পরিদর্শন শেষে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় শুরু হয়েছে নবগঙ্গা নদীর তীব্র ভাঙ্গন। নদীগর্ভে চলে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপাড়াসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে বারইপাড়া মাহাজন সড়ক, মানুষের বসতভিটা, কবরস্থান, মসজিদ, পাকা রাস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এই সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হলে তলিয়ে যাবে হাজার  হাজার একর ফসলী জমি, ভেসে যাবে শত শত মাছের ঘের।

 

কাঞ্চনপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ আলেক শেখ বলেন, আমাদের বাড়ি ঘর সব নদীতে চলে গেছে। আমাদের মাথা গোজার মত এই বাড়িটাই শুধু ছিল তাও চলে গেল । এখন আমার ছেলে মেয়েদের  নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি ।

 

একই গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মুক্তার  বলেন, আমরা খুবই আতংকে দিন পার করছি ,আমাদের  এই রাস্তা যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে আমাদের  বাড়িসহ বাকি সব গুলো বাড়ি নদীতে চলে যাবে । সেই সাথে আমাদের এলাকার সব পুকুর ঘের সহ ফসলি জমি নদীতে চলে যাবে । আমাদের এলাকার প্রায় সবাই এই কৃষিকাজ করে জীবিকা নিব্র্হা করে।

 

নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি হারিয়েূ সর্বশান্ত ফুলি বিবি বলেন ,আমার বাড়ি নদীতে চলে গেছে, এখন আমি   আমার বসতবাড়ি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গিছি । কোথায় থাকবো কি করবো কিছুই বুৃঝতে পারছি না । এই বাড়িটুকু ছাড়া আমার আর কোনো জায়গা জমিও নেই যে সেখানে একটু মাথ্ াগোজার মত জায়গা পাবো। এখন আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোথায় থাকবো। আকাশের নিচে ছাড়া আমার থাকার কোনো জায়গা নেই।

 

বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তবিবুর শেখ আবেগঘন হয়ে বলেন, আমার সারাজীনের কষ্টের ফসল আমার এই বাড়ি টুকু তাও নদীতে চলে গেলে । অনেক কষ্টে আমি বাড়িটা করেছিলাম আমার আর কিছুই থাকলো না । জানিনা এখন পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো ।

 

আঙ্গিনার সবজি ক্ষেত ও বসতবাড়ি হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন  পথে আশ্রয় নেওয়া হাসি বেগম বলেন, আমার  আার কিছুই নেই সব নদীতে চলে চলে গেছে । আশ্রয় নেওয়ার মত এখন আমার রাস্তা  ছাড়া  আর কোথাও জায়গা  নেই, রাতে ঘুম নেই ঠিকমত খাবার নেই, কিভাবে রাত দিন পার করছি আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা ।

 

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ভাঙ্গন রোধে অতীতে জরুরী ভিত্তিতে জিয়ো ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধের প্রাথমিক চেষ্টা করা হয়। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জরুরীভিত্তিতে স্থায়ীভাবে বাধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন নদীপাড়ের বসতীরা।

 

নদী ভাঙ্গনের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারবৃন্দ। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন।

 

নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের  নিবার্হী প্রকৌশলী  উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন,  আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

 

উধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরুরী ভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন,  স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধের জন্য সার্ভে করে প্রকল্প গ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একই সাথে জরুরীভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।