বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৩:৫১ অপরাহ্ন
রিপোর্ট: রাইসুল মিথুন
দিন আসে দিন যায়। আসে মাস সে-ও চলে যায়। এভাবে বছর, বছরের পর যুগ। বদলায় অনেক কিছু। কিন্তু বাঘ বিধবাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। একদিকে সামাজিক কুসংস্কার অন্যদিকে স্থানীয় প্রভাবশালী মানুষের লাঞ্ছনা গঞ্জনায় দিন কাটে বাঘ বিধবাদের। উপকূলের শ্যামনগর সুন্দরবন সংলগ্ন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণে বাঘ বিধবাদের নিয়ে সামাজিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বেলা এগারোটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কলবাড়ী সিডিও অফিসে ইকো-মেন প্রকল্পে আওতায় পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট জাস্টিসের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ এনভায়রমেন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বেডস্) এর সহযোগিতায় এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
জীবন-জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের আক্রমণে স্বামী হারা ২০জন ‘বাঘ-বিধবা’ এবং স্থানীয় সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও যুবদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সংলাপটি অনুষ্ঠিত সংলাপে ইকো-মেন প্রকল্পের জেলা সমন্বয়ক হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাঘ-বিধবাদের নিয়ে কাজ করা সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ পিযুষ বাউলিয়া পিন্টু, জলবায়ু কর্মী শামিম হোসেন, সংবাদকর্মী জুবায়ের মাহমুদ, ইয়ুথনেট ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট জাস্টিসের সাতক্ষীরা জেলা সমন্বয়ক ইমাম হোসেন, এনজিওকর্মী রুবিনা পারভীন।বাঘের আক্রমণে মারা গেলেও তাদের নাম সরকারি হিসাবে ওঠে না।
পিযুষ বাউলিয়া পিন্টু বলেন, বিগত সময়ে বাঘের হামলায় নিহত হলে পারিবারকে এক লাখ টাকা ও আহত হলে চিকিৎসার জন্য ৫০হাজার টাকা দেয়ার সরকারি নিয়ম ছিল। কিন্তু অনেকেই অন্যের নামের পাস নিয়ে বনে যান। তাদের জন্য সরকারি কোনো সুবিধা নেই।
সংলাপে অতিথিরা তাদের বক্তব্যে আরও বলেন, কুসংস্কারেরই একটি প্রতিচ্ছবি ‘বাঘ-বিধবা’ অপবাদ। বিয়ে-জীবন-মৃত্যু সৃষ্টিকর্তার হাতে। অথচ এ জন্য দায়ী করা হয় অসহায়-অবলা নিষ্পাপ স্ত্রীকে। সুন্দরবনে প্রবেশের আগে বনজীবীরা বন বিবির পূজা করে। এর বাইরেও তাদের মধ্যে আরো অনেক কুসংস্কারই আছে। যেমন কারো স্বামী সুন্দরবনে গেলে সেই নারী অন্য পুরুষের সাথে কথা বলতে পারেন না, চুল আঁচড়াতে পারেন না, শরীরে তেলও মাখতে পারেন না। বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা কার্যক্রমে এসব কুসংস্কার অনেকটা কমেছে। তবে এখনো অনেক পরিবার এসব কুসংস্কার মেনে চলে। এই কুসংস্কার থেকে তাদের বের করে আনার দাবি জানান তাঁরা।