শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট: ভয়েস অফ সুন্দরবন
বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় যৌন শোষণ এবং নির্যাতন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে নারীরা, শিশুরা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা অধিক হুমকির মুখে থাকে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের নিশ্চয়তা বিধানে সচেতনতা এবং তথ্যপ্রবাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থা (JPNUS) ও Disable Child Foundation (DCF) এর যৌথ উদ্যোগে এবং Interagency Community Outreach and Communication Fund এর অর্থায়নে আজ এটা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে “যৌন শোষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ প্রচার” শীর্ষক এক বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজে নির্যাতনের ধরন ও প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, আইনি ও সামাজিক সহায়তার পথ নির্দেশনা, এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন।
অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব :
অনু শোষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। বর্তমান বিশ্বে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, শ্রম শোষণ, পারিবারিক নির্যাতন, যৌন সহিংসতা, মানব পাচার এবং প্রতিবন্ধীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে যৌন শোষণ ও নির্যাতনের বিভিন্ন ধরন, আইনগত সাহায়তা, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়। এই প্রচার কার্যক্রমটি বিভিন্ন পর্যায়ে বিভক্ত ছিল, যাতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সচেতনতার আলো পৌঁছে যায়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন “এম,ডি হুমায়ুন কবির” উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা , শ্যামনগর, সাতক্ষীরা, তিনি বলেন- নির্যাতনের শিকার অনেক নারী ও শিশু ভয় ও সামাজিক লজ্জার কারণে মুখ খুলতে পারেন না। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকায় অনেক নারী নির্যাতনের শিকার হয়েও সহ্য করতে বাধ্য হন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রায়ই কর্মসংস্থানের বৈষম্যের শিকার হন, যা তাদের দুর্বল অবস্থানে নিয়ে যায়। এছাড়াও, তিনি আইনি সহায়তা ও জরুরি প্রতিকার ব্যবস্থা সম্পর্কে উপস্থিতদের সচেতন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন “বিজন রিমা”, এ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, তিনি বলেন- আমরা প্রতিনিয়ত কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য ও অবহেলার শিকার হই। আমাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হলে সমাজকে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি সমাজ পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইনি সহায়তা ও সরকারি ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও জানানো দরকার।অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, “অষ্টমী মালো” তিনি বলেন—প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত এবং শোষিত জনগোষ্ঠী। তাদের প্রতি নির্যাতন বন্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই। তিনি আরো বলেন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সাল, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩, শিশুশ্রম প্রতিরোধ আইন, ২০০৬, এই কর্মশালার মাধ্যমে উপস্থিত জনগণ তাদের আইনি অধিকার ও প্রতিকার পাওয়ার উপায় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পান। এই প্রচার কার্যক্রমটি অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সচেতনতা ও ক্ষমতায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে উপস্থিত সবাই নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা ঘটেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃতভাবে বাস্তবায়নের আশা করা যায়।
স্থান: জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থা নিজস্ব কার্যালয়, নকিপুর, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।আয়োজনে: জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থা (JPNUS) ও Disable Child Foundation (DCF)
অর্থায়নে: Interagency Community Outreach and Communication Fund.