মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম:
রিডা হাসপাতালে ফ্রি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল ক্যাম্প ও হেলথ কার্ড বিতরণ সাতক্ষীরা- ৪ প্রার্থী মনিরুজ্জামানে পৃষ্ঠপোষকতায় দুই বিএনপি নেতার কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ।  শ্যামনগর উপজেলা জিয়া সাইবার ফোর্স-এর আয়োজনে দোয়া মাহফিল ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ শ্যামনগরে পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্পের উপকরণ বিতরণ   ৬ নম্বর রমজান নগর ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি অফিস উদ্বোধন ও খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রিতীর অভিযোগ উঠেছে  শ্যামনগরে স্টোকহোল্ডারস প্লাটফর্ম গঠন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরের ইট ভাটা শ্রমিক সুজন গাজীর এক সপ্তাহ থেকে কোন খোজ পাচ্ছে না পরিবার শ্যামনগরে ভুমিহীন পরিবারের জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, এঘটনায় আহত -২ শ্যামনগরে সিপিপি কর্মকর্তার অনিয়ম–দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন
এইমাত্র পাওয়া:
চোখ রাখুন

থমকে গেছে জনজীবন সাতক্ষীরায় টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৫হাজারেও বেশি মৎস্য ঘের ও ৩ হাজার পুকুর,তলিয়ে গেছে ধানখেত

শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না
Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

 

 

শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না, সাতক্ষীরা

 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিরাজমান করছে। এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় গত তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে।থমকে গেছে জনজীবন, জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এ ছাড়া অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৫ হাজার মৎস্য ঘের ও ৩ হাজারের বেশি পুকুর। বিভিন্ন উপজেলার বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে বেতনা নদীর বাধ। আমন ধানের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগের সব শেষ তথ্যনুযায়ি জানা গেছে- অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৫ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ও ৩ হাজারের বেশি পুকুর। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান আরও বাড়তে পারে বলেও জানা গেছে। এদিকে জোয়ারে নদীতে বেড়েছে পানির উচ্চতা। এতে শ্যামনগর ও আশাশুনির এলাকায় আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলের মানুষ।

 

এদিকে বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতিবৃষ্টির কারণে খাল-বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সদ্য রোপণ করা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে ধানের খেত টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকেরা। তালা উপজেলার ত্রিশ মাইল এলাকায় রাস্তার উপরে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।

 

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত চব্বিশ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া গত তিনদিনে ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা চলতি বছরে এ জেলায় সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত। আগামি কাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত কমবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অফিস।

 

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো.অলিউর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠসহ অনেক সড়ক তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ। এমন অবস্থা যে, চলাচল করতে গিয়ে মানুষ দুর্ঘটনায় পড়ছেন। নর্দমার পানি এত নোংরা যে, পানি মাড়িয়ে রাস্তা পার হলে সঙ্গে সঙ্গে পায়ে চুলকানি শুরু হয়।

 

স্থানীয়রা জানান,গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শত শত হেক্টর জমির ঘের, ফসলের ক্ষেতসহ বিভিন্ন জলাভূমি ডুবে গেছে।

 

বিনেরপোতা, গোপীনাথপুর, মাগুরা, খেজুরডাঙ্গা ও তালতলা এলাকার নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। অনেকের বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এলাকার কবরস্থান পর্যন্ত পানির নিচে ডুবে রয়েছে। রাস্তাও পানির নিচে ডুবে রয়েছে। যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন মানুষ। ফসলের মাঠ ও পুকুর পানিতে একাকার হয়ে গেছে।

 

আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ দরগাহপুর গ্রামের মৎস্য চাষি বিপ্লব হোসেন ও আব্দুস সাত্তার মোড়ল জানান,তাদেরসহ এলাকায় ছোট বড় হাজারও মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ নেই। পুকুর বসত বাড়ি ও রাস্তার ওপর পানি জমেছে। প্রতিবছরই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। অথছ দেখার কেউ নেই।

 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.সাইফুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টির পানিতে খাল-বিল সব ডুবে গেছে। শবজি ও আমন ধানের খেতও ডুবে গেছে। যদি দুইতিন দিন এভাবে পানির নিচে ধানগাছ তলিয়ে থাকে, তাহলে তা বাঁচানো যাবে না। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার মো. আনিছুর রহমান জানান, গত তিন দিনের বৃষ্টিতে ছোট বড় মিলিয়ে ৫ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের তলিয়ে ও ভেসে গেছে। এখনও পযন্ত কয়েকটি উপজেলার তথ্য এখনও হাতে পায়নি পেলে বিস্তারিত জানানো হবে।

 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে যেসব এলাকায় জোয়ার-ভাটার ব্যবস্থা নেই, সেসব এলাকায় দুই থেকে তিন ফুট পরযন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো বাঁধ বৃষ্টিপাতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।##

 

শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না সাতক্ষীরা। ১৬.০৯.২৪